আচ্ছা এমন ঘটনার মুখমুখি হয়তো আপনি হয়েছেন নয়তো কাউকে হতে দেখেছেন- সেটা হল , আপনি আপনার পছন্দের একটি গাড়ী কিনবেন বলে বা বাইরে কোথাও বেড়াতে যাবেন বলে বা এরকম কিছু কারনের জন্য আস্তে আস্তে অল্প অল্প করে কিছু কিছু সঞ্চয় করছেন,কিন্তু হটাৎ আপনি খবর পেলেন যে আপনার বোনের একটা জরুরী অপারেশন করা প্রোয়োজন, বা আপনার বাড়ীর ফ্রীজটা হটাৎ খারাপ হয়ে গেছে, ওটাকে এবার বদলাতে হবে, তখন আপনার গাড়ী বা বেড়াতে যাওয়ার স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটে। তখন আমরা বেশির ভাগ সময়ে যা বলি তা হল এ পোড়া কপালে সখ আহ্লাদ বৃথা।
আমি বলব কথাটি ঠিক নয়, আপনি কি আপনার জন্য কোনো এমারজেন্সি ফান্ডের পরিকল্পনা তৈরী করে রেখেছেন? অনেকে বলবেন আমারতো সবসময় কিছু টাকা ব্যাঙ্কের সেভিংস একাউন্টে পরে থাকে, ওটাই আমার সব। আমি আপনাকে বলছি পরিকল্পনা মাফিক আপনি কি আপনার অজানা অচেনা,অকল্পনীয় পরিস্হির জন্য কোনো ফান্ডের ব্যবস্হা রেখেছেন? মানুষের জীবনে যেকোনো সময়ে যা কিছু ঘটতে পারে। ধরা যাক্ হটাৎ এমন কিছু একটা ঘটল যাতে করে আপনার জব বা রোজগার আর নেই, বা আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ বড়ো কোনো হেল্থ চ্যালেঞ্জে পড়লেন, বা আপনার ছেলের স্কুলে হটাৎ কোনো অতিরিত্ত ফী চেয়ে বসল, এরকম কিছু যার জন্য আপনি মানসিক বা আর্থিক কোনো দিক থেকেই তৈরী নন্, তখন কি হবে? এরকম পরিস্হিতিতে আমি অনেককে দেখেছি তার অতি যত্নে শুরু করা সন্তানের শিক্ষার জন্য সঞ্চয় কে বন্ধ করে টাকা তুলে নিতে, বা নিজের রিটায়ারমেন্ট পরিকল্পনা বন্ধো করে দিতে এবং ওখান থেকে টাকা তুলে নিতে। কত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা যে এই সামান্য অথচ গুরুত্বপূরনো একটু পরিকল্পনার অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে তার ইয়ত্বা নেই। তাই বলি ভগবান না করুন কাল যদি আপনাকে এরকম পরিস্হিতির সামনা সামনি হতে হয় তখন ঐ পরিস্হিতির সামনা সামনি হওয়ার জন্য আপনি পুরোপুরি তৈরী তো?
তাহলে উপায় কি? আগে আমি বল্বো যে সত্যিই মানসিক ভাবে মানেন তো যে একটা সামান্য গাড়ীর যেমন স্টেপনি থাকে আপনার জীবনের গাড়ীর জন্য এমারজেন্সী ফান্ডের প্রোয়জন?
আপনি আপনার আয়করা অর্থ থেকে সমস্ত ব্যয় এবং বিনিয়োগ বাদ দিয়ে অল্প কিছুকিছু সামান্য অর্থ এমারজেন্সী ফান্ডে সঞ্চয় করুন। আপনি যদি বলেন কত করে প্রতি মাসে আমি রাখলে সেফ থাকবো? আমার উওর হল এটা ঠিক করার জন্য আপনি কোনো আর্থিক পরিকল্পনাকারীর সামনে বসুন,উনি আপনাকে আপনার আয়,ব্যায়,সমস্ত বিচার করে ঠিক করে দেবেন। অনেকে মনে করেন ৬ মাসের খরচের অর্থ সবসময় রাখা উচিৎ। এ ভাবে কোনো নিরদিষ্ট করে কিছু বলা যায় না।
আপনি ব্যাঙ্কে একটি সেভিংস একাউন্ট খুলে নিয়ে সেটিকে এমারজেন্সী ফান্ড হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। ঐ সেভিংস একাউন্টটিকে আবার অটো ফিকসড্ ডিপোজিট লিঙ্ক করে নিতে পারেন, তাতে আপনি সুদটাও ৪% এর থেকে বেশী পাবেন। আবার আপনি চাইলে মিউচ্যাল ফান্ডের লিকুইড ফান্ডকেও এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারেন। এটিও ব্যাঙ্ক সেভিংস্ একাউন্টের মতই। এই ফান্ডটির কোনো অর্থ স্টক মারকেটে বিনিয়োগ হয় না। তাই ভয়ের কিছু নেই। এখানে আপনি রিটার্নএকটু বেশী পেতে পারেন।
যদি আপনি এই ভাবে এমারজেন্সী ফান্ড রেখে চলতে পারেন তাহলে ভবিষ্যতে আপনাকে হয়ত আর মাঝ পথে কোনো দীর্ঘকালীন লক্ষ্যের বিনিয়োগ থেকে সরে আসতে হবে না। আবার কোনো সময় হটাৎ কোনো ভালো বিনিয়োগের সুযোগ হাতের সামনে এলে সেটিকেও আপনি সহজেই গ্রহন করতে পারবেন। আপনি মানসিক ভাবেও অনেক দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে পারবেন।