আমায় একজন প্রশ্ন করে জানতে চয়েছেন যে, কখন তিনি ইকুইটি মিউচ্যাল ফান্ড থেকে বেরিয়ে যাবেন?
আমি তাকে কিছু প্রশ্ন করে ছিলাম। যেমন- আপনি কেন ইকুইটি মিউচ্যাল ফান্ডে টাকা রেখে ছিলেন? আপনি কি কোনো আর্থিক লক্ষপূরনের উদ্দেশ্যে অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন? ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই প্রশ্ন গুলোর উত্তরের মধ্যেই রেয়েছে ওনার ঐ প্রশ্নের উত্তর।
যখন কোনো বিনিয়োগের পূর্বে বিনিয়োগের উদ্দেশ্য,রীস্ক নেবার খমতা,বিনিয়োগের নিজস্ব রীস্ক,প্রভৃতি না বুঝে শুধুমাত্র ভালো রীটারর্নের লোভে কিছু টাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়, তখনই এই ধরনের প্রশ্নের উদয় হয়। ইকুইটি মার্কেটের নেচার সম্বন্ধে কোনো ধারনা না থাকার কারনেও এই ধরনের প্রশ্ন আশে।
এক কথায় উত্তর হল যখন আপনার আর্থিক লক্ষ পূরন হয়ে যাবে, অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে আপনি বিনিয়োগ করেছেন সেটি যখন পূরন হয়ে যাবে তখন আপনি ঐ ইকুইটি ফান্ড থেকে বেরিয়ে যাবেন। হতে পারে আপনি বিনিয়োগের পূর্বে কোনো নির্দিষ্ট রীটার্ন সেট করে রেখেছেন তাহলে সেটা পূরন হয়ে গেলেও বেরিয়ে যাবেন। তার পর ঐ ফান্ডটি পরে যত বেশী বা যত কমই রীটার্নই দিক না কেন ও নিয়ে আপনার কোনো দুঃখ বা আনন্দ কোনোটাই থাকা উচিত নয়। এটাই সঠিক মানসিকতা।
আমি এই প্রশ্নটির উত্তর টেকনিক্যাল ওয়েতে মার্কেটের বিভিন্ন পরিস্হতি উদাহরন হিসাবে নিয়ে দিতে পারতাম কিন্তু সচেতন ভাবে সকলের বোঝার সুবিধার্থে সহজ সরল ভাবে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
অনেকে আবার বিশ্বসই করতে পারেন না যে ইকুইটি ফান্ড থেকে আর্থিক স্বপ্ন পূরন সম্ভব। আমি এনাদের খেত্রে কনো স্টাস্টিটিক্স দেবার পক্ষপতি নই। করন আমি মনে করি সন্দেহ করার বাতিক কখনো যুক্তি দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়। বড়জোর চুপ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে। তাতে ঐ ব্যক্তির আখেরে কোনো লাভ হয় না।
একটা কথা মাথয় রাখা প্রয়োজন যে, পরীকল্পনাকারীর সঙ্গে বসে পরিকল্পনা করে, লক্ষ অনুযায়ী বিনিয়োগ করলেই বিনিয়োগটি ভবিষ্যতে সফলতা পাবে এমন কোনো কথা নেই। মনে রাখবেন শুধুমাত্র পরীকল্পনা নির্ধারন সফলতার একটা শুভ সূচনা মাত্র। ঐ পরিকল্পনাটকে সার্থকভাবে সফল করার জন্য একটি নির্দষ্ট সময় অন্তর পরীকল্পনা কারীর সঙ্গে বসে সবিস্তারে লক্ষটিকে রীভিউ করা ভীষন প্রোয়জন। আমার মতে পরীকল্পনা রূপায়নের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়।
অনেকেই ইকুইটি মিউচ্যাল ফান্ডে কোনো দীর্ঘমেয়াদী লক্ষপূনের জন্য আস্তে চাননা, বা এলেও মার্কেট একটু বাড়লে বা কমলেই ভেতরে ভেতরে ছটফটানি শুরু হয়ে যায় টাকাটি তুলে নেওয়ার জন্য। আমি বলবো যদি আপনি এই ফান্ডে ঢোকার সিদ্ধান্তটা নিজে নিয়ে থাকেন তাহলে বেরুবার সিদ্ধান্তটা অবশ্যই আপনিই নেবেন, আর যদি সিদ্ধান্তটা পরীকল্পনাকারীর সঙ্গে আলোচনা করে নিয়ে থাকেন, তাহলে বেরুনোর আগে অবশ্যই তার সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত করুন।
আপনিকি আপনার সন্তানের চিকিৎসা চিকিৎসকের পরামর্শ মত শুরু করার পর মাঝখানে আপনার সন্তান হয়ত একটু বেশী খারাপ আছে বা বেশী ভালো আছে বলে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হটাৎ নিজে চিকিৎসা শুরু করে দেন? নিশ্চই নয়। এটাও তাই।
আবার অনেকের মনের মধ্যে ঘোরে, যদি তিনি তার সন্তানের শিক্ষ্যার অর্থ সংস্হানের কারনে ১৮ বছরের জন্য বা নিজের রীটায়ারমেন্টের জন্য ১৫ বছর মেয়াদে কয়েকটি ইকুইটি ফান্ডে এস.আই.পি মোডে বিনিয়োগ শুরু করেন, এবার যদি ঐ কাঙ্খিত ১৮ বছর বা ১৫ বছরের সময়টিতে ইকুইটি মার্কেট কমে যায় তখন কি হবে?
আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে কোনো সাধারন বিনিয়োগকারীর এটি একটি সঠিক অথচ অযৌক্তিক প্রশ্ন। সঠিক এই কারনে যে একজন সাধারন বিনিয়োগকারী তিনি নিজে জানতে না চাইলেও ইকুইটি মার্কেটের দুটি খবর অবশ্যই জানতে পারেন, এক মার্কেট কখন একদম কম আছে আর মার্কেট কখন খুব বাড়ছে। এই দুটি সময়েই খবর আপনি না চাইলেও আপনার কাছে পাখা মেলে আপনার কাছে চলে আসবে টভি,খবরের কাগজ,প্রভৃতির মাধ্যমে
এবার বলি কেনো অযৌক্তিক। আচ্ছা বলুনতো আপনি একজন আইনোজ্ঞের পরামর্শ মত একটি মামলা করেছেন। মামলা চলতে চলতে আপনি দেখলেন যে কোনো একদিন বিপক্ষের উকিল চোখা চোখা প্রশ্ন বানে আপনার উকিলকে প্রায় শুইয়ে দিয়েছে। এবার আপনি কি আপনার উকিলকে না জানিয়ে মমলাটি তুলে নেবেন। নিশ্চই নয়।
এখানেও ঠিক একই ব্যপার। আমি আগেই বলেছি নির্দিষ্ট সময় অন্তর আপনার আর্থিক পরীকল্পনা কারীর সঙ্গে বসে পরীকল্পনা এবং পরিস্হতি রীভিউ করা প্রয়োজন। এটা যদি আপনি নিয়মিত করেন, তাহলে আপনার ঐ চিন্তা অযৌক্তিক। আপনার পরীকল্পনাকারী জানেন অনেক স্ট্রাটেজি। তিনি আপনার রীস্ক নেবার খমতা, আয়, বায় প্রভৃতি আরও অনেক কিছু বিচার করে কখন আপনার ঐ ফান্ডটিকে ঝঁুকি বীহিন ফান্ডে সরিয়ে নিয়ে আসা প্রয়োজন তিনিই আপনাকে বলে দেবেন। আপনাকে শুধু তার ওপর বিশ্বাস এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা প্রয়োজন।
1 thought on “ইকুইটি ফান্ডে বিনীয়োগের পূর্বেও যেমন পরিকল্পনা প্রয়োজন তেমনি বেরোনোরও পরিকল্পনা প্রয়োজন।”
Very useful information,thanks.